
রংপুর জেলা প্রতিনিধি, গোলাম আজম ঃ
রংপুর সহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে পৌষের প্রথম দিন থেকে শীতের তীব্রতা ও হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
একইসঙ্গে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবী মানুষ।কনকনে ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা কাবু হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, শীতের তীব্রতা বেড়ে গতরবিবার (ডিসেম্বর ১৯) থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করায় রংপুর বিভাগের সবগুলো জেলার ছিন্নমূল মানুষের চরম ভোগান্তি বেড়ে যেতে পারে। তবে শীত মোকাবিলায় সরকারের সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কুড়িগ্রাম ‘র রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্র জানায়,পৌষের শুরু থেকেই ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। গতকাল সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।আজ ৯ দশমিক ৮ তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।রেকর্ড করা হয়েছে। এ মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরো একসপ্তাহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
শীতের কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত স্থানীয়রা দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েই চলছে। সামর্থ্যবানদের চাহিদা থাকায় বৈদ্যুতিক দোকানগুলোতে গিজার আর ইলেকট্রিক ক্যাটলির বিক্রি ও বাড়ছে।তবে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ গুলো।
তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও বের হতে হয়। গংগাচড়া মহিপুর কাকিনা আদিতমারী ঘুরে দেখা গেছে কনকনে শীতে ঠান্ডা জনিত রোগে শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
উলিপুর উপজেলা ব্রহ্মপুত্র নদের সীমান্তবর্তী হওয়ায় ,বন্যা মোকাবিলা করে পরিবার নিয়ে টিকে থাকার চাইতে শীত নিয়ে বেশী আশঙ্কায় আছেন তারা। নদী পার বাসির অনেকেই বলেন, ‘বানে নৌকার, মাচায় উঠে জীবন বাঁচাই। কিন্তু শীতে বৌ-বাচ্চা নিয়া আর এক বিড়ম্বনা। এর ওপর ঠাণ্ডায় কাজ করতে না পারলে খাওয়ার কষ্ট সহ্য করা লাগে। শীত বেশি হইলে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়, হাত-পা হিম হয়া যায়।
কাম কাজ করব্যা পরিনা।
জেলা প্রশাসক জানান, শীতে কোন মানুষ যেন কষ্ট না পান সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন এনজিও থেকেও কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলাগুলোতে সেগুলো বণ্টন করা হয়েছে। আশা করছি শীতে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।