
ফরহাদুল ইসলাম(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের খাগাতোয়া গ্রামে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একজন নিহত হয়েছে।নিহতের নাম মোঃ মাসুদ মিয়া (৩৫) পিতা মঙ্গল মিয়া। গতকাল বৃহসপতিবার (২৫/১১) খাগাতোয় ভোরের বাজারের একটি চাষ্টলের সামনে প্রকাশ্যে এ খুনের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে , জানাযায়, আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের খাগাতুয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ তার ভাগ্নিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাক্তার দেখানোর উদ্দ্যেশ্য বাড়ি থেকে বের হয়ে খাগাতুয়া ভোরের বাজারে চা খাওয়ার সময়, ৩টি সিএনজি যোগে নৌকার সমর্থক এডভোকেট রব মিয়া,শফিক মিয়া,আলম মিয়া,ফজু ও লিটন মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে, এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মাসুদকে রক্তাক্ত অবস্থায় সিএনজি যোগে উঠিয়ে নিয়ে খাগাতুয়া পশ্চিম পাড়া কবরস্থান সংলগ্ন নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পের সামনে দ্বিতীয় দফায় কুপিয়ে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়, পরে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন মাসুদকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় নবীনগর সরকারী হাসপাতালে নিয়ে এলে, তার অবস্থার অবনতি হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার করেন।ঢাকা নেওয়ার পথে মাসুদ মারা যায়। মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে যাবার পরপরই এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে রতনপুর ইউনিয়নে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রতনপুর ইউনিয়নে সাধারন মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আতংক।
প্রত্যদর্শী মাসুদের ভাগ্নি শারমিন আক্তার বলেন, আমি এবং আমার মায়ের চোখের সামনে এডভোকেট রব মিয়া,শফিক মিয়া,আলম সহ কয়েজন সন্ত্রাসী সিএনজি দিয়া আইসা আমার মামাকে কুপিয়ে সিএনজি দিয়ে পশ্চিম পাড়া শাকিল মিয়ার নৌকার অফিসের সামনে আবার কুপায়ছে,পরে এই বাজারে অটু রিক্সা দিয়া আইন্না ফালাই গেছে। আনারস মার্কার নির্বাচন করার কারনে আমার মামারে খুন করেছে।
গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক মুকবুল হোসেন বলেন, গ্রামেতো আগের থেকেই দুই গ্রুপ বিরোধ ছিল সম্প্রতি প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বিরোধ মিমাংসা হয়েছে। শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শাকিল সমর্থিত সমর্থকরা নির্বাচনে তাদের মাঠের অবস্থা ভাল না টের পেয়ে প্রতিপক্ষের উপর এ হামলা চালিয়েছে। এ হামলার মূল হোতা আ’লীগ প্রার্থী শাকিল এডভোকেট রব মিয়া ও আবদুল হক সাহেব ।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভিপি মারুফ বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈশ্বার্ণীত হয়ে প্রতিপরে লোকজন গতকাল রাতে মিটিং করে আমার কর্মী মাসুদের উপর পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালিয়ে তাকে নিশংস ভাবে খুন করেছে। প্রতিপরে লোকজন আমার কর্মী সমর্থকের উপর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।
এই বিষয়ে নৌকা’র প্রার্থী শাকিল বলেন, এই ঘটনায় অবশ্যই শক্ত বিচার হওয়া উচিৎ,কোন সন্ত্রাসী এবং মাদকসেবীকে আমি আশ্রয় প্রশ্রয় দেইনা। মারামারি কাটাকাটি পছন্দ ও সমর্থন করিনা। এই ঘটনার সাথে আমার কোন কর্মী সমর্থক জড়িত না। এইটা তাদের পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘটেছে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুর রশিদ বলেন,এটা একটি বিচ্ছিন ঘটনা,পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে, ঘটনা স্থলে পুলিশ রয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, এই ঘটনায় আমি অবগত হয়েছি এবং সাথে সাথে ওসি এবং সার্কেলকে জানিয়েছি,তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নবীনগরের নির্বাচন হবে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ।